জাতিসংঘের
শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা UNESCO ১৩
অক্টোবর ২০১৬ ফিলিস্তিনিদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার বিষয়ে একটি প্রস্তাব পাস
করে। আল আকসা মসজিদ ইস্যুতে ইসরায়েল বিরোধী এ প্রস্তাবের ওপর
ভোটাভুটিতে চীন, রাশিয়া, ইরানসহ
২৪ টি দেশ পক্ষে ভোট দেয়। যুক্তরাস্ট্র, ব্রিটেন
ও জার্মানিসহ ৬টি দেশ ভোট দেয় প্রস্তাবের বিপক্ষে। আর ভোট দানে বিরত থাকে ২৬ টি
দেশ। পাসকৃত প্রস্তাবে UNESCO ঘোষণা করে যে, মুসলমানদের প্রথম
কিবলা ও তুতীয় পবিত্র স্থান বলে বিবেচিত আল আকসা মসজিদের ওপর ইসরাইলের কোন অধিকার নেই।
আল আকসা মসজিদের পবিত্র স্থান। ইউনেস্কোর প্রস্তাবে জেরুজালেমে অবস্থিত আল আকসা মসজিদকে কেবল ‘হারাম আল শরিফ’ বলে উল্লেখ করা হয়। মসজিদটি মুসলিমদের কাছে এ নামেই পরিচিত। ইহুদিরা এ স্থানকে বর্ণনা করে ‘টেম্পল মাউন্ট’ বলে। ইহুদিদের বিশ্বাস, এখানেই দুটি অত্যন্ত প্রাচীন ইহুদি মন্দিরের অবস্থান। আল আকসা সীমানা দেয়ালকে ইহুদি ধর্মালম্বীরা ‘ওয়েস্টান ওয়াল’ বলে দাবি করে থাকেন। এরই ভিত্তিতে ইসরায়েল সরকারও প্রাচীন নগরী জেরুজালেমের ওপর নিজেদের দাবিকে জোরাল করতে চায়।
জেরুজালেমের
ইহুদী ঐতিহ্য নাকচ করে দিয়ে সেখানে ইসরায়েলের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানানোয় ১৪ অক্টোবর ২০১৬ সাথে
তাদের সহযোগিতা স্থগিত করার ঘোষণা দেয়
ইসরায়েল। ইসরায়েলের অভিযোগ ১৩ অক্টোবর ২০১৬ ইউনেস্কোতে
জেরুজালেম বিষয়ক যে দুটি প্রস্তাব গৃহীত হয়, তাতে
জেরুজালেমের সাথে ইহুদিদের সম্পর্ককে অস্বীকার করা হয়। ইউনেস্কোর প্রস্তাবের
শিরোনামে ‘দখলকৃত ফিলিস্তিন’ও ফিলিস্তিন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও পূর্ব
জেরুজালেমের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য শব্দগুলো ব্যবহার করায় ইসরায়েল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
সর্ব শেষ নবী
হযরত মুহাম্মদ (সঃ) শুরুতে কিছুদিন আল আকসার দিকে ফিরেই ইবাদত করেন। মদীনায়
হিজরতের বছর দুই পর কিবলা পরিবর্তিত হয়ে কা'বা
শরীফ কিবলা সাব্যস্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আল আকসাই ছিল মুসলমানদের কিবলা। এ জন্য একে
প্রথম কিবলা বলা হয়। বর্তমানে পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা পবিত্র ও মর্যাদাশীল মসজিদের
মধ্যে প্রথম মক্কার কা'বা শরীফ, দ্বিতীয়
মদীনার মসজিদে নববী ও তৃতীয় জেরুজালেমের আল আকসা মুসলমানদের নিকট স্বীকৃত।
হযরত
ওমর (রাঃ) কর্তৃক ফিলিস্তিন বিজয়ের সময় থেকে এ মসজিদ মুসলমানদের। এর ম(ধ্য ক্রুসেডারদের হাত থেকে সুলতান
সালাহউদ্দিন আউয়ুবি এটি মুক্ত করেন। ইহুদী আগ্রাসনের সময় পর্যন্ত এটি মুসলমানদের
মসজিদ। নবী করিম (সঃ) মিরাজ গমনের সময় আল আকসায় অতীতের সব নবী-রাসূলের জামাতে ইমাম
হয়ে দু'রাকাত নামাজ আদায় করেন। ঐতিহাসিক ভাবেই
এটি মুসলমানদের পবিত্র স্থান। ইহুদিদের সাথে এর কোন ধর্মীয় বা ঐতিহাসিক
সংশ্লিষ্টতা নেই। ইউনেস্কোর এ সংক্রান্ত প্রস্তাব বিশ্ব সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে
গৃহীত সিদ্ধান্তে এ সত্যিই সুপ্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত হয়।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন